২৪ তারিখের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত ও বাতিল: শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য এবং প্রেক্ষাপট
১. প্রেক্ষাপট ও ঘটনাবলী
২০২৪ সালের ৩০ জুন থেকেই শুরু হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের কারণে ১৮, ২১, ২৩, ২৫, ২৮ জুলাই ও ১ ও ৪ আগস্টের দিনগুলোতে স্থগিত হয়েছিল। এরপর ১১ আগস্ট থেকে আবার পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ কেন্দ্রেই অবস্থার অবনতি হওয়ায় সংশোধিত সময়সূচি বাতিল করা হয় ।
২. অনভিপ্রেত ঘটনার প্রভাবে পরীক্ষা বাতিল
২১ আগস্টে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ থেকে শুরু হয়ে কয়েকটি কেন্দ্রের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অবনতি হলে, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তমতে বাকি পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করা হয়। শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন—
“একটা অনভিপ্রেত ঘটনাও এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রণয়নে সহায়ক হয়েছে। সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি” ।
৩. শিক্ষামূল্যায়ন ও ফলাফল প্রকাশ
পরীক্ষায় করা নম্বর না নেয়া হলেও, তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট বোর্ড পরীক্ষামূলক মূল্যায়নের মাধ্যমে ফল প্রকাশ করবে। পাশাপাশি টেস্ট বা প্রি‑টেস্টের প্রশ্নপত্রগুলোও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে ।
৪. শিক্ষাক্রম ও বইয়ে সংস্কারের অঙ্গীকার
তিনি জানান, ২০২১ সালের আগের বইগুলো পুনঃপ্রকাশ করা হচ্ছে। তবে প্রয়োজনানুযায়ী কিছু পাঠ্যবস্তুর সংশোধন হবে ও বইয়ের মুদ্রণে দুর্নীতির চর্চা থেকে বিরত থাকার কথাও বলেন । জানুয়ারির মধ্যেই বই প্রিন্ট ও বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।
৫. শিক্ষাব্যবস্থার নিরাপত্তা ও নিয়োগ বিষয়ে ব্যাখ্যা
উপদেষ্টা আরও বলেন, আন্দোলনের প্রেক্ষিতে কিছু শিক্ষক ও কলেজশিক্ষক নিরাপত্তাজনিত কারণে স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে, যা দুঃখজনক। সুরক্ষার স্বার্থে যা প্রয়োজন, তা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
তাছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ পরিষদে কোনও রাজনৈতিক প্রভাব না থাকার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে কাজ চলছে ।
উপসংহার ও শিক্ষামূলক ভাবনা
যথাযথ পরিস্থিতি না থাকলে শিক্ষা মূল্যায়নের integrity (অখণ্ডতা) বজায় থাকে না। উপরোক্ত পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত মোটামুটি যুক্তিযুক্ত।
বিক্ষোভ ও আন্দোলনের গুরুত্ব — আন্দোলন শিক্ষার্থীদের দাবির কথা তুলে ধরতে কার্যকর হলেও, নিরাপত্তা রক্ষা করতে মুক্তিযুদ্ধের রাস্তায় অশান্তি শৃঙ্খলা ভেঙে দিতে পারে।
পরবর্তী আয়োজন, ফলাফল ঘোষণা ও ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি — বোর্ডের কার্যকর মূল্যায়ন, বইয়ের মান উন্নয়ন ও নিরাপদ পরিবেশে ভর্তি সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিকতা ও স্বচ্ছতা — অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পদক্ষেপ নিতে যা প্রয়োজন, তা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষাবিষয়ে পরবর্তী করণীয়
1.সূচ্য অনুযায়ী বই বিতরণ ও মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা।
2.পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করা শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা জনপ্রিয় করে তোলা।
3.নিরাপত্তায় সব কেন্দ্র ঠেকিয়ে পরীক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা।
4.ধারণক্ষমতা ও সাংস্কৃতিক পড়াশোনায় গুরুত্ব বাড়ানো।
সামগ্রিক মন্তব্য
এই ঘটনাগুলো শিক্ষাক্ষেত্রে শুধুমাত্র পরীক্ষাসমূহ বাতিল নয়, বরং ব্যাপক শিক্ষাসংস্কার ও নিরাপত্তামূলক সংস্কারের দরকারও নির্দেশ করছে। রাষ্ট্র, বোর্ড ও শিক্ষার্থীদের সক্রিয় সহযোগিতায়— আগামী এইচএসসি ও ভর্তি পর্যায়ে নিশ্চয়ই পূর্বের থেকে শক্তিশালী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।
