![]() |
| Bangladeshesh bank |
গত ২৩ অক্টোবরের পর থেকে দেশের প্রতিদিনের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ভয়াবহ এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ধরা পড়েছে — বাংলাদেশ ব্যাংক-এর মতিঝিল শাখার সার্ভার ব্যবহারে প্রভাবিত হয়ে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর-এর সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ২৫ লাখ টাকার প্রায় অর্থ আত্মসাতের ঘটনা সামনে এসেছে। সেই সঙ্গে এসব ঘটনায় তিনটি ব্যাংক খাতের অ্যাকাউন্ট ও বেশ কয়েকটি কর্মকর্তার কম্পিউটার জব্দ করা হয়েছে।
এই ব্লগ পোস্টে আমরা জানব কীভাবে এটি ঘটেছে, কারা আর কীভাবে জড়িত, বিষয়টি কতটা গভীর, এবং এরপর কী হওয়া উচিত – সাধারণ গ্রাহক ও সরকারী-বেসরকারী দৃষ্টিকোণ থেকে।
অভিযোগ রয়েছে, সঞ্চয়পত্রের সার্ভারে (হয়তো ইউজার আইডি/পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে) অননুমোদিত প্রবেশ ঘটেছে।
এক গ্রাহক হিসেবে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনা হয়। পরে তা পরিবর্তিত মোবাইল নম্বর ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বরে ভেঙে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
তিনটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কম্পিউটার জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
বিষয়টি জানতে পেরে সঞ্চয় অধিদপ্তরের সার্ভার ও তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবস্থার নিরাপত্তা দ্রুত জোরদার করতে বলা হয়েছে।
ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড খোলসায় রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে — সেই আইডি দিয়ে সার্ভারে অননুমোদিত হস্তক্ষেপ সম্ভব হয়েছে।
মিথ্যা মোবাইল নম্বর ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ব্যবহারের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র ভাঙার চেষ্টা।
মোটিকেন্দ্রীয় শাখার (মতিঝিল) ক্ষতিটি সনাক্ত হওয়া পাওয়া গেছে, এবং অন্যান্য শাখায় একই ধরনের ঘটনা আছে কি না তা এখনো তদন্তাধীন।
বাংলাদেশ ব্যাংক, সঞ্চয় অধিদপ্তর, বিএফআইইউ – এই তিনটি সংস্থা ঘটনা তদন্ত করছে।
অভিযুক্ত হিসেবে আছে কয়েক জন ব্যাংক কর্মকর্তা ও ব্যবহারকারী-ব্যক্তি।
সাধারণ গ্রাহক যারা সঞ্চয়পত্র কিনেছেন তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কারণ এমন ধরনের ভঙ্গি ঘটে গেছে।
সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠেছে — সিস্টেম কতটা সুরক্ষিত ছিল, এবং কি অপর্যাপ্ত পরিমাপ ছিল?
ব্যাংকিং এবং বিনিয়োগ খাতে প্রবেশযোগ্যতা ও বিশ্বাস সংকটের ঝুঁকি রয়েছে।
সঞ্চয় অধিদপ্তরের সার্ভার ও সিস্টেম-অ্যাক্সেসের মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন বাধ্যত করা।
সময়মতো অভ্যন্তরীন তথ্যপ্রযুক্তি অডিট ও সাইবার নিরাপত্তা মূল্যায়ন করা।
গ্রাহকদের মোবাইল নম্বর, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কঠোর যাচাইকরণ চালু করা।
এই ধরনের অভিযোগ দ্রুত তদন্তে নেওয়া ও সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া।
সাধারণ গ্রাহকদের জন্য পরামর্শ
সঞ্চয়পত্র কেনা/ভাঙানোর সময় মোবাইল নম্বরে ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আসা OTP (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) ঠিক রয়েছে কি না নিশ্চিত করুন।
যদি কোনো অস্বাভাবিক নোটিফিকেশন পান — যেমন: আপনি এমন সঞ্চয়পত্র ভাঙার আবেদন করেননি— তাহলে দ্রুত সংশ্লিষ্ট ব্যাংক/সঞ্চয় অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করুন।
ব্যাংকের মোবাইল অ্যাপ বা অনলাইন ব্যাংকিংতে নিয়মিত লগইন ও ট্রান্স্যাকশন মনিটর করুন।
এই ঘটনা শুধু এক-দুই ব্যক্তির দুর্নীতি নয় — এটি আমাদের দেশীয় সঞ্চয় ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তি সুরক্ষা ও প্রতিকার ব্যবস্থার গুরুত্বকে সামনে এনে দিয়েছে। সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে শুধু প্রযুক্তি নয়, মনুষ্যবহুল প্রক্রিয়া, নিয়মনীতি,কার্মকর্তাদের শুদ্ধাচার—সবকিছু একসাথে কাজ করবে।
